রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)-গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে চারটি অধিদপ্তর রয়েছে। এর অন্যতম হল রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। রাজধানী ঢাকার উন্নয়নে কাজ করে থাকে এ প্রতিষ্ঠান। ঢাকা শহরে বাড়ি নির্মাণ করার আগে বাড়ির প্ল্যান রাজউক থেকে অনুমোদন করিয়ে নিতে হয়। অন্যথায় আইনি ঝামেলার সম্মুখীন হতে হয়।

রাজউক কী?

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ একটি সরকারি সংস্থা। ঢাকার উন্নয়ন প্রকল্পসমূহের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করে থাকে এ প্রতিষ্ঠান।

১৯৫৬ সালের ১০ ডিসেম্বর এ সংস্থার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। তখন এটির নাম ছিল ঢাকা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট (ডিআইটি)। ১৯৮৭ সালের ৩০ এপ্রিল এর নাম পরিবর্তন করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) রাখা হয়।

রাজউক প্রকল্পসমূহের পরিকল্পনা

রাজউকের দায়িত্বসমূহ

রাজধানীর উন্নয়নে অনেক গুরু দায়িত্ব পালন করে থাকে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। নিচে এ প্রতিষ্ঠানের কিছু দায়িত্ব তুলে ধর হল:

  • যুগোপযোগী পরিকল্পনা প্রণয়ন:

    ঢাকা শহরকে বাসযোগ্য রাখার জন্য যুগোপযোগী সব পরিকল্পনা গ্রহণ করে থাকে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। এলাকা ও স্থানভেদে পরিকল্পনায় ভিন্নতা নিয়ে আসে সরকারের এ সংস্থা।

  • পরিকল্পনা বাস্তবায়ন:

    ঢাকা শহরকে বাসযোগ্য রাখার যেসব পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে এগুলোর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে নানান আইন,কোড, বিধি প্রণয়ন ও পরিমার্জন করে থাকে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।

  • আবাসন সমস্যা দূরকরণ:

    ভূমি কম ও মানুষ বেশি। এজন্য রাজধানীতে রয়েছে আবাসন সমস্যা। এ সমস্যা দূর করতে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) গড়ে তোলে পরিল্পিত আবাসিক এলাকা ও স্যাটেলাইট টাউন। বেসরকারি আবাসন প্রকল্পসমূহের অনুমোদন প্রদান করে এবং তদারকি কার্যক্রমও গ্রহণ করে থাকে

  • সরকার কর্তৃক আরোপিত উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন:

    সরকারের দায়িত্বশীল অন্যান্য মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর বা দপ্তরসমূহ রাজধানীর উন্নয়নে কোনো পরামর্শ দিলে বা অনুরোধ করলে সেটার যৌক্তিকতা নিয়ে আলোচনা এবং প্রয়োজনে তা বাস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহণ করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। এছাড়াও সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে সমন্বয়পূর্বক যৌথ উন্নয়নে কাজ করে থাকে সরকারের এ সংস্থা।

  • পাওয়ার অব অ্যাটর্নি/আম- মোক্তার নামা অনুমোদন:

    নিজেদের বিভিন্ন প্রকল্পে প্লট ও ফ্ল্যাট বরাদ্দ, রেজিস্ট্রেশন, নামজারী, হস্তান্তর ও আম-মোক্তার নামা অনুমোদন করে থাকে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।

রাজউক অনুমোদিত নকশায় বাড়ি নির্মাণের সুফল

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) অনুমোদিত নকশায় বাড়ি নির্মাণ করলে যেসব সুফল মিলবে:

  • নগরের সৌন্দর্য রক্ষা:

    রাজউকের অনুমোদিত নকশায় এবং প্ল্যান অনুযায়ী বাড়ি নির্মাণ করলে বাড়ির আশপাশে প্রশস্ত রাস্তা থাকে এবং বাড়ির নকশাও হয় আকর্ষণীয়। ফলে বাড়ি ও আশপাশ দেখতে ভালো লাগে এবং রক্ষা হয় নগরের সৌন্দর্য।

  • নিরাপদে বসবাস:

    সঠিক প্ল্যান অনুযায়ী বাড়ি করলে সে বাড়ি বসবাসের জন্য বেশি নিরাপদ হয়। বাড়ির প্ল্যান ঠিক আছে কি-না তা পরীক্ষা করার দায়িত্ব রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এর। তাই রাজউকের প্ল্যান অনুযায়ী বাড়ি করলে নিরাপদে বসবাসের নিশ্চয়তা বাড়ে।

  • পারস্পরিক সম্প্রীতি রক্ষা:

    ইচ্ছামত নকশায় বাড়ি করলে সে বাড়ির মাধ্যমে প্রতিবেশী ও পথচারীদের ক্ষতি হতে পারে। অন্যদিকে রাজউক প্ল্যান অনুমোদনের আগে অনেক চিন্তা ভাবনা করে। তাই রাজউকের প্ল্যান অনুযায়ী বাড়ি করলে কেউ ক্ষতির মুখে পড়বে না। বজায় থাকবে পারস্পরিক সম্প্রীতি।

  • সামাজিক দায়িত্ব পালন:

    একজন নাগরিকের ওপর সমাজ সুন্দর রাখার অনেক দায়িত্ব থাকে। বাড়ি নির্মাণের সময় নাগরিক দায়িত্বগুলো মনে করিয়ে দেয় রাজউক। ফলে রাজউকের প্ল্যান অনুযায়ী বাড়ি বানালে রাস্তা প্রশস্ত রাখা এবং সবুজায়নের মাধ্যমে সমাজ সুন্দর রাখার দায়িত্ব পালন করা সম্ভব হয়।

  • বিক্রয়ে অধিক মূল্য প্রাপ্তি:

    কোনো কিছু ক্রয় করার আগে প্রথমে মানুষ বাহ্যিক দর্শন দেখে থাকে। এরপর গুণ বিচার করে। রাজউকের প্ল্যান অনুযায়ী বাড়ি নির্মাণ করলে বাড়ির আশপাশে গাছপালা ও চলাচলের পথ থাকে। গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা থাকে। ফলে ক্রয়মূল্য বা নির্মাণ ব্যয়ের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি মুনাফায় তৈরি বাড়ি বা ফ্ল্যাট বিক্রয় করা সম্ভব হয়।

  • আইনি ঝামেলা এড়াতে:

    অনুমোদন ছাড়া বাড়ি নির্মান করলে আইনানুগ যে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারবে রাজউক। কষ্টার্জিত অর্থ খরচ করে এবং অনেক শ্রম দিয়ে বাড়ি নির্মাণের পর কেউ বিপদে পড়তে চাইবে না। কিন্তু রাজউকের অনুমোদন ছাড়া বাড়ি করলে ঝামেলায় পড়তে হয়। তাই আইনি ঝামেলামুক্ত থাকতে হলে রাজউকের অনুমোদন নেওয়ার বিকল্প কিছু নেই।

যেভাবে নেওয়া যাবে রাজউকের অনুমোদন

অনলাইনে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এর নির্ধারিত ওয়েবসাইটে গিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। অ্যাকাউন্ট খোলার পর সেখানে যেসব তথ্য চাওয়া হয়েছে সবগুলো তথ্য ধাপে ধাপে দিতে হবে। সব তথ্য ঠিক থাকলে সর্বোচ্চ ৫০ কার্যদিবসের মধ্যে মিলবে রাজউকের অনুমোদন।

অফলাইনে অনুমোদন নেওয়ার জন্য রাজউকের নিকটস্থ অফিসে যোগাযোগ করলে সেখান থেকে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাবে।

রাজউকের অনুমোদন

কেন বাড়ি নির্মাণ ও ফ্ল্যাট ক্রয়ের আগে রাজউকের অনুমোদন প্রয়োজন?

ফ্ল্যাট ক্রয়ের আগে একজন ক্রেতার উচিৎ বিক্রেতার কাছে রাজউকের অনুমোদন দেখতে চাওয়া। রাজউকের অনুমোদন ছাড়া যে বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে এমন বাড়িতে ফ্ল্যাট ক্রয় করলে যে কোনো সময় আইনি ঝামেলায় জড়িয়ে যেতে হবে।

বাড়ি নির্মাণের আগেও রাজউকের অনুমোদন নিয়ে নেওয়া। অন্যথায় যে কোনো সময় রাজউক চাইলে ভবন মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে।

ফ্ল্যাট কেনার নিয়ম কানুন

সারসংক্ষেপ

নিজেকে নিরাপদ রাখতে বাড়ি নির্মাণের আগে রাজউকের অনুমোদন নিয়ে নিন। ফ্ল্যাট ক্রয়ের আগে রাজউকের অনুমোদন নিয়ে ভবন নির্মাণ করা হয়েছে কিনা জেনে নিন। সকল গ্রাহককে নিশ্চিন্ত ও নিরাপদ রাখতে স্বদেশ প্রপার্টিস লিঃ রাজউকের অনুমোদনকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। এজন্য বাড়ি নির্মাণে অনুমোদন দেওয়ার জন্য রাজউক যেসব শর্ত দিয়ে থাকে সেসব শর্ত মেনেই নিজেদের প্লটগুলো সাজিয়েছে স্বদেশ স্বদেশ প্রপার্টিস লিঃ।

বিস্তারিত জানতে
 Proudly Announce 
Our Valuable Corporate Clients
Arrow