ঢাকা শহরের সেরা ১০ আবাসিক এলাকা

যে এলাকায় শিল্প ও বাণিজ্যের পরিবর্তে আবাসন প্রাধান্য পায় সে এলাকাকে আবাসিক এলাকা বলা হয়। ঢাকা শহরে অনেক আবসিক এলাকা রয়েছে। তবে সুযোগ-সুবিধা ইত্যাদির বিবেচনায় ঢাকা শহরের কিছু এলাকা বসবাসের জন্য উপযুক্ত। ঢাকা শহরের এরকম সেরা ১০ আবাসিক এলাকা নিয়ে আলোচিত হয়েছে এ ব্লগে।

রাজধানী ঢাকার পরিকল্পিত সেরা ১০ আবাসিক এলাকা

ঢাকার পরিকল্পিত সেরা ১০ আবাসিক এলাকা

১. বারিধারা

ঢাকা শহরের সেরা ১০ আবাসিক এলাকার মধ্যে অন্যতম হল বারিধারা। এই এলাকায় রয়েছে কূটনৈতিক অঞ্চল যেখানে রয়েছে অসংখ্য বিদেশী দূতাবাস এবং কূটনীতিকদের বসবাস। বারিধারার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত বারিধারা ডিওএইচএস এলাকা। এই এলাকার রাস্তা, ভবন ও নিরাপত্তাব্যবস্থাসহ সবকিছুই পরিকল্পিত। তাই এলাকাটি অত্যন্ত নীরব এবং সুরক্ষাব্যবস্থাও অত্যন্ত শক্তিশালী।

বারিধারায় রয়েছে জেনারেল রেসিডেন্সিয়াল এরিয়া। এ স্থানের সঙ্গে রাজধানীর অন্যান্য স্থানের যোগাযোগব্যবস্থা বেশ সহজ। রাস্তাগুলো বেশ প্রশস্ত এবং বহুমুখী যার কারণে শহরের যে কোনো স্থানে খুব সহজেই যাতায়াত করা যায়। বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো এ এলাকা থেকে দূরে হওয়ায় এলাকাটি অনেক নিরিবিলি। ইতিমধ্যে বারিধারার আশপাশেও গড়ে উঠেছে পরিকল্পিত অনেক আবাসন প্রকল্প। যেখানে প্রয়োজনীয় সব সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। রয়েছে নিরিবিলি পরিবেশে বসবাসের সুযোগ। আপনি যদি নিরিবিলি ও সুরক্ষিত কোনো পরিবেশে বসবাসের সুযোগ খোঁজ করে থাকেন, তাহলে বেছে নিতে পারেন বারিধারাকে।

পূর্বাচল আবাসিক এলাকা

২. পূর্বাচল

বর্তমানে ঢাকা শহরের সেরা ১০ আবাসিক এলাকার মধ্যে নাম্বার ওয়ান এলাকা হিসেবে গণ্য করা হয় পূর্বাচলকে। এ শহরে গড়ে উঠছে ১১১ তলা আইকনিক টাওয়ার, বাণিজ্যিক ও প্রশাসনিক বহুতল ভবন। পুরো শহর খাল ও কৃত্রিম লেক দিয়ে ঘেরা। এখানে রয়েছে বন, ইকো পার্ক ও সবুজ চত্বর। তৈরি হচ্ছে ফুটবল ও ক্রিকেটের জন্য আন্তর্জাতিকমানের পৃথক দুটি স্টেডিয়াম। সার্বিক নিরাপত্তার জন্য পূর্বাচলে গড়ে তোলা হচ্ছে থানা, পুলিশ লাইন, পুলিশ ফাঁড়ি, পুলিশ বক্স, পুলিশের ডিসি অফিস, র‌্যাব অফিস এবং ফায়ার স্টেশন। সামাজিক অবকাঠামোর মধ্যে নির্মাণ করা হচ্ছে হচ্ছে ক্লাব, কমিউনিটি ও কনভেনশন সেন্টার। মসজিদ ও মন্দিরসহ নানান ধর্মীয় অবকাঠামো গড়ে উঠেছে এখানে। খেলাধুলা ও পার্কের জন্য রয়েছে বিশাল মাঠ এবং বিনোদনের জন্য পার্ক। স্বাস্থ্যসেবার জন্য পূর্বাচলে নির্মিত হচ্ছে কমিউনিটি ক্লিনিক, মেডিক্যাল কলেজ, অটিজম সেন্টার। শিক্ষা কার্যক্রমের জন্য স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদরাসা নির্মাণ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে শেরেবাংলানগর থেকে পূর্বাচলে স্থানান্তরিত করা হয়েছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। অত্যাধুনিক সব সুযোগ সুবিধাসম্পন্ন ও নিরিবিলি পরিবেশে বসবাস করার জন্য পূর্বাচল হতে পারে নির্ভরযোগ্য ঠিকানা।

বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা

৩. বসুন্ধরা

বারিধারা ও পূর্বাচলের মধ্যে রয়েছে ঢাকা শহরের আরেক সেরা আবাসিক এলাকা বসুন্ধরা। বসুন্ধরা গ্রুপ বেসরকারি এ এলাকা গড়ে তুলেছে। ঢাকার অন্যতম সুপরিকল্পিত এ এলাকায় রয়েছে প্রশস্ত রাস্তাঘাট, পরিবহন ও যোগাযোগব্যবস্থা। এলাকাটিকে ঢাকার অন্যান্য অংশের সাথে সুন্দর করেই সংযুক্ত করা হয়েছে। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা অসংখ্য ব্লকে বিভক্ত। এটি আবাসিক এলাকা হলেও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের জন্যও বেশ উপযুক্ত। সঠিক নিষ্কাশন ব্যবস্থার ফলে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা ঢাকার অন্যান্য এলাকার চেয়ে অনেক পরিচ্ছন্ন। এভারকেয়ারের মতো স্বনামধন্য হাসপাতাল এবং নর্থ সাউথ, আইইউবির মতো গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো রয়েছে এ এলাকায়। প্রতিদিনই বসুন্ধরা এলাকায় সংযুক্ত হয় নতুন নতুন উন্নয়ন। বর্তমানে অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তি দিয়ে সাজানো হচ্ছে বসুন্ধরা এলাকাকে। এখানকার নিরাপত্তাব্যবস্থা চোখে পড়ার মতো। সবকিছু বিবেচনায় বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা বসবাসের জন্য অত্যন্ত নিরাপদ ও সুরক্ষিত।

উত্তরা মডেল টাউন আবাসিক এলাকা

৪. উত্তরা মডেল টাউন

বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গেলেই চোখ পড়ে উত্তরা মডেল টাউনে। ঢাকাসহ সারাদেশের পরিকল্পিত আবাসিক এলাকার প্রসঙ্গ সামনে এলেই যে এলাকার নাম আলোচনায় উঠে আসে সেটি হল উত্তরা মডেল টাউন। চমৎকার সব ডুপ্লেক্স, অ্যাপার্টমেন্ট ও ভবন দিয়ে সাজানো এ মডেল টাউন। এ এলাকার রাস্তাঘাট অত্যন্ত সাজানো গোছানো। বিনোদনের জন্য পার্ক, শিশু-কিশোরদের খেলার জন্য মাঠ, আধুনিক শপিংমল, রেস্তোঁরা, স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা এবং দেশসেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে সবকিছুই রয়েছে এ এলাকায়। আবাসিক ও বাণিজ্যিক সুবিধার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে উত্তরাকে সেক্টরে সেক্টরে বিভক্ত করা হয়েছে। উত্তরা মডেল টাউনের অধীনস্থ দিয়াবাড়ি এলাকা থেকেই যাত্রা শুরু হয়েছে মেগাপ্রকল্প মেট্রোরেলের। ফলে উত্তরা থেকে পুরো ঢাকা শহরে চলাচল করা এখন মাত্র কয়েক মিনিটের ব্যাপার।

বনানী ও গুলশান মডেল টাউন আবাসিক এলাকা

৫. বনানী

লম্বা সময় ধরেই ঢাকা শহরের সেরা আবাসিক এলাকায় নিজের অবস্থান ধরে রেখেছে বনানী। এ এলাকায় রয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদর দপ্তর। আরও রয়েছে আধুনিক সব রেস্তোঁরা, আবাসিক ভবন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শপিংমল এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কর্পোরেট অফিস। এখানে রয়েছে বনানী লেক। প্রতিদিনই মানুষ লেকপাড়ে ঘুরতে বা শারীরিক ব্যায়াম করার জন্য আসেন। হোটেল শেরাটন ও সেরিনাসহ নামিদামী অনেক হোটেল রয়েছে বনানীতে। খেলার মাঠ ও বিনোদনকেন্দ্রসহ সব রকমের সুযোগ সুবিধা রয়েছে ব্যস্ততম সেরা আবাসিক এলাকা বনানীতে। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কাছে হওয়ায় অনেক কূটনীতিক এবং বিদেশি ব্যবসায়ীরা এ এলাকায় বসবাস করে থাকেন।

৬. গুলশান

ঢাকা শহরের সেরা ১০ আবাসিক এলাকার প্রসঙ্গ উঠলেই প্রথমেই যে নাম উচ্চারিত হয় সেটি হল গুলশান। বিলাসবহুল এবং আভিজাত্যের আরেক নাম হল গুলশান। বাংলাদেশের উন্নতমানের আবাসিক ভবন, রেস্তোঁরা, বিনোদনকেন্দ্র, হোটেল এবং শপিংমলের অধিকাংশই গুলশানে অবস্থিত। গুরুত্বপূর্ণ অনেক করপোরেট অফিস রয়েছে গুলশানে। হাতিরঝিলের এক অংশ গুলশানে রয়েছে। প্রতিদিন অনেক মানুষ গুলশানে বেড়াতে, শপিং করতে বা কর্মস্থলে আসেন। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যেও কম নয় গুলশান। এখানে রয়েছে লেক, চারদিকে ফল-ফুলের সবুজ গাছপালাসহ নানান প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।

বনশ্রী ও ধানমন্ডি মডেল টাউন আবাসিক এলাকা

৭. বনশ্রী

বনশ্রী এলাকাটি অত্যন্ত সাজাসো গোছানো ও পরিপাটি। বিভিন্ন ব্লকে বিভক্ত করা হয়েছে বনশ্রীকে। এখানে গড়ে উঠছে পরিকল্পিত ও অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন আবাসিক ভবন। ভবনের দুইপাশে রয়েছে প্রশস্ত রাস্তা। বনশ্রীতে নির্মিত হয়েছে অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ক্লিনিক, হাসপাতাল, সুপারশপ, রেস্তোঁরা এবং কমিউনিটি ও কনভেনশন সেন্টার। এ এলাকায় রয়েছে বর্জ্য নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা। ঢাকা শহরের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পর্যটনস্পট হাতিরঝিল বনশ্রীতেই অবস্থিত। জল ও স্থলপথ দিয়ে খুব সহজেই বনশ্রী থেকে ঢাকা শহরের যে কোনো স্থানে সহজেই যাতায়াত করা যায়।

৮. ধানমন্ডি

স্বাধীনতার আগ থেকেই ধানমন্ডি ঢাকা শহরের সেরা আবাসিক এলাকা। বর্তমানে এটি রাজধানীর অন্যতম ব্যস্ত এলাকা। প্রাইভেট নামিদামী স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে ধানমন্ডিতে। নামিদামী সব সুপার শপ, শপিংমল ও রেস্তোঁরাসহ সব রকমের সুযোগ সুবিধা রয়েছে এ এলাকায়। এ এলাকার রাস্তাগুলো অনেক প্রশস্ত। আবাসিক ভবনগুলো অনেক পরিকল্পিত। পুরনো ভবনগুলো ভেঙে এখানে গড়ে তোলা হচ্ছে অত্যাধুনিক সব ভবন। ধানমন্ডি লেক সবার কাছে পরিচিত এক নাম। এছাড়াও এখানে রয়েছে রবীন্দ্র সরোবর। সব সুযোগ সুবিধা বিবেচনা করলে ধানমন্ডি বসবাসের জন্য অত্যন্ত চমৎকার একটি এলাকা।

জলসিঁড়ি ও আফতাবনগর আবাসিক এলাকা

৯. জলসিঁড়ি

জলসিঁড়ি আবাসন প্রকল্প বাংলাদেশের একমাত্র স্মার্ট সিটি হতে যাচ্ছে এ প্রকল্পটি। সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের জন্য তৈরি করা এ আবাসন এলাকা নারায়নগঞ্জের রূপগঞ্জে অবস্থিত। পরিকল্পিত পূর্বাচল নিউ সিটির কোল ঘেঁষা জলসিঁড়ি প্রকল্পে থাকছে সর্বাধুনিক নাগরিক সুবিধা; এ আবাসনের নিকটদূরত্বে গড়ে উঠেছে স্বদেশ প্রপার্টির স্বর্ণালী আবাসন প্রকল্প।

১০. আফতাবনগর

কূটনৈতিক জোন গুলশান-বারিধারা ও ১০০ ফিট মাদানী এভিনিউ এর নিকটবর্তী বর্তমান ঢাকার অন্যতম পরিকল্পিত আবাসিক এলাকা আফতাবনগর। আফতাব নগর এলাকাতে গড়ে উঠছে অনেক বাণিজ্যিক ও কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান; নামিদামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো আফতাব নগরে তাদের শাখা স্থাপন করছে। এই আফতাব নগরের পাশেই রয়েছে স্বদেশ প্রপার্টির সানভ্যালি আবাসন প্রকল্প।

সারসংক্ষেপ

ঢাকায় বসবাসরত অধিকাংশ মানুষের স্বপ্ন থাকে উল্লেখিত সেরা কোনো এক আবাসিক এলাকায় বসবাস করার। নানান কারণেই অনেকের সে স্বপ্ন অপূর্ণই রয়ে যায়। সবার স্বপ্ন সত্যি করতে এগিয়ে এসেছে স্বদেশ প্রপার্টিস লিঃ। সেরা আবাসিক এলাকা পূর্বাচলমাদানি অ্যাভিনিউ বারিধারায় রয়েছে স্বদেশের জমি ও প্লট। সুলভ মূল্যে এখান থেকে জমি ও প্লট কিনে সেরা আবাসিক এলাকায় গড়ে তুলতে পারেন আপনার আগামীর ঠিকানা।

জমি ও প্লট সম্পর্কে জানতে কল করুন
 Proudly Announce 
Our Valuable Corporate Clients
Arrow